দেশে এই কদিন আগে SSC পরীক্ষার রেজাল্ট দিয়েছে। সামনে আবার HSC এর রেজাল্ট বের হবে। প্রতি বছরের মত এবারও পত্রিকার পাতায় প্রচুর পরিমাণে খারাপ বা আশানুরূপ না হওয়া রেজাল্টের কিশোর- কিশোরীর আত্মঘাতী খবর আমরা প্রতিদিনই পড়ছি।
মানুষ কখন আত্মঘাতী হয় ? এই প্রশ্নের উত্তরে বলা যায়, "কোনো মানুষ কেবল তখনই আত্মহত্যা করতে উদ্যত হতে পারে যখন তার নিরাশা অত্যন্ত
চরমে পৌঁছে; যখন আশার কোনো আলো তার হৃদয়ে অনুভূত হয় না; যখন তার অস্তিত্ব ও সত্তার কোন মূল্যবোধ অবশিষ্ট রয়েছে বলে অনুভূত হয়না; অর্থাৎ যেসব ‘মূল্যের’ ভিত্তিতে সে এতদিন অস্তিত্বে ছিল এবং যেসব ‘মূল্য-বোধের’সাথে তার সত্তার পরিচিতি ছিল, সেই মূল্যে-নির্ধারিত ‘পরিচিতি’এখন নিঃশেষ হয়ে গিয়েছে; এখন তার বেঁচে থাকার কোনো অর্থ নেই।" তখনই ঐ মানুষটি আত্মহত্যার মত পথ খুঁজে নেয়।
স্বীকার করি বর্তমান বাস্তবতায় প্রতিযোগিতামূলক লেখাপড়ায় কিছু করার উপায় থাকে না। কিন্তু আপনার বা ফ্যামিলীর চাওয়া পাওয়ার হিসেব যখন আপনার কচি শিশুটি আর মিলাতে পারবে না, তখন আর সময় থাকবে না। হয় সে বিপথগামী হবে, নতুবা আত্মঘাতীর মত পথ বেছে নেবে।
পরীক্ষায় খারাপ বা আশানুরূপ ফলাফল না এলে বাচ্চাকে বকাবকি থেকে বিরত থাকুন। বন্ধুর মত পার্শ্বে দাঁড়ান , তাকে শান্তনা দিন। আপনার এই সামান্য সহানুভূতি আপনার বাচ্চাটির মনে কিন্তু রেখাপাত করবে।
সম্প্রতি শাওন নামে এক কিশোর আত্মঘাতী হয়েছে। আর আত্মহত্যার আগে সে তার বিক্ষিপ্ত চিন্তার কিছু লেখা লিখে গেছে। আসুন পড়ে দেখি তার সেই সুইসাইডাল নোট।
আমার দেশ অনলাইনের রিপোর্টটি এরকম:
"বাণিজ্য বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে ৪.৮৩ পায় আরাফাত শাওন। কিন্তু বাবা-মা তার এ রেজাল্টে খুশি নয়। জিপিএ ৫
না পাওয়ায় বাবা-মায়ের বকুনি খেতে হয় তাকে। বাবা-মার ওপর অভিমন করে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় সে। তার আগে সে নিজের নোটবুকে আগে লিখে যায় ব্যথা বেদনার কথাগুলো। পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হল তার কথা :
আমি জানি না আজ আমি ঠিক কি ভুল কাজ করছি তবে এখন এটা ছাড়া আমার আর কোন উপায় ছিল না। আসলে ছেলে হয়ে এ পরিবারে জন্ম গ্রহণ করাটাই আমার দূরভাগ্য। তা না হলে ছোট থেকে এ পর্যন্ত মেয়ের মতো সব সময় পরিবারের কাজ করতেই হয়েছে। আর কখনো পরিবার থেকে আমাকে খেলাধুলার সময় বা খেলতে দেওয়া হয়নি। আর আমিও মেয়ের মতো সব সময় মায়ের আঁচলের নিচেই ছিলাম।
আর আমি আদো জানি না যে আমি কি? এই পরিবারের বা আমার মা-বাবার সন্তান, তা না হলে সব সময় এ রকম শাসন আর কড়া শাসনের উপর আমাকে রাখা হয়েছে। কোন বাবা-মা তার সন্তানকে পড়া লিখার খরচে খোটা দেয় না। কিন্তু আমার মা বাবা সব সময় আমাকে বলে তোর জন্য মাসে মাসে হাজার হাজার টাকা খরচ করছি। এভাবেই প্রতি নয়ত বকাঝযকা করা হয়। সব সময় বাবার থেকে শুধু খারাপ ভাষার গালি আর গালি শুনতে হয়। যা আমার একটু বালো লাগতো না। কিন্তু আমি এতো দিন সহ্য করে ছিলাম। কারণ কোন কিছু করার কথা ভাবলে মনে হতো এ দুনিয়ায় তো বাবা-মায়ের আদর ভালোবাসা পেলাম না। পেলাম না শুখ শান্তি। আসলে মানুষ বলে যে ঠিক টাকা পয়সা ও ধন সম্পদ মানুষকে সুখী করতে পারে না। আর যদি আমি নিজের হাতে আত্মহত্যা করি তা হলে মরর পরও শান্তি পাবো না। আর মরার পর আমাকে জাহান্নামের আগুনে জ্বলতে হতো। তাই এখন আমার আর এসব কিছু সহ্য হচ্ছে না। …
আমাদের ছাত্রদের কি দোষ বলুন আমরা তো আমাদের মতো শ্রেষ্টা (চেষ্টা) করে যাই। তবে আমাদের দেশের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড গুলো কারণে আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার এমন হাল। এর আগের বছর সরকার তার নিজের স্বার্থের জন্য শিক্ষার হার বাড়িয়ে দিয়েছে। আর এবার হরতাল-অবরোধ দেয়ার ফলে বর্তমান সরকার বিরোধী দলিয় সরকারকে গালি দেওয়ার জন্য পাশের হার কমিয়ে দিয়েছে, যাতে দেশে ফেল এর হার বেড়েছে। বলুন আমরা আর কি ভাবে ভালো রেজাল্ট করতে পারি!!!???
আমাদের মা-বাবা চায় আমরা ভালো রেজাল্ট করি। কিন্তু দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার দিকে ও তো দেখতে হবে। আমার বাবা ও আমার আত্ত্বীয়-স্বজন আমার এ রেজাল্ট (৪.৮৩) এর উপর খুশিনা। সবাই আমাকে বকাবকি করছে। কিন্তু আমার স্কুলের মধ্যে ২য় স্থান পাওয়ার পরও কিন্তু তারা অন্যদের রেজাল্ট এর কথা দেখে না, ভাবে না। তাদের কথা আমাকে A+ পেতেই হবে। A+ কি গাছে ধরে যে আমি পেড়ে আনবো। আরো অনেক কথা যা মনের ভিতর জমা করে রেখেছি। কিন্তু বললে শেষ হবে না। থাক। যদিও আমি মারা যাই … তা হলে সবাই আমাকে ক্ষমা করে দিবেন। আর যদিও বেঁচে যাই….!!!
আমার কিছু ঋণ রয়েছে
DJ Flower Tuch= সূর্য ৯০০
আমার বন্ধু শুভ= ১০০ (টাকা)
ইসমাইল= ২০০/পূবালী ইলেকট্রনিক শহীদ মার্কেট
[লেখকের নিজ হাতে লেখা বানান অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে]।"
https://www.facebook.com/Psychobd
মানুষ কখন আত্মঘাতী হয় ? এই প্রশ্নের উত্তরে বলা যায়, "কোনো মানুষ কেবল তখনই আত্মহত্যা করতে উদ্যত হতে পারে যখন তার নিরাশা অত্যন্ত
চরমে পৌঁছে; যখন আশার কোনো আলো তার হৃদয়ে অনুভূত হয় না; যখন তার অস্তিত্ব ও সত্তার কোন মূল্যবোধ অবশিষ্ট রয়েছে বলে অনুভূত হয়না; অর্থাৎ যেসব ‘মূল্যের’ ভিত্তিতে সে এতদিন অস্তিত্বে ছিল এবং যেসব ‘মূল্য-বোধের’সাথে তার সত্তার পরিচিতি ছিল, সেই মূল্যে-নির্ধারিত ‘পরিচিতি’এখন নিঃশেষ হয়ে গিয়েছে; এখন তার বেঁচে থাকার কোনো অর্থ নেই।" তখনই ঐ মানুষটি আত্মহত্যার মত পথ খুঁজে নেয়।
স্বীকার করি বর্তমান বাস্তবতায় প্রতিযোগিতামূলক লেখাপড়ায় কিছু করার উপায় থাকে না। কিন্তু আপনার বা ফ্যামিলীর চাওয়া পাওয়ার হিসেব যখন আপনার কচি শিশুটি আর মিলাতে পারবে না, তখন আর সময় থাকবে না। হয় সে বিপথগামী হবে, নতুবা আত্মঘাতীর মত পথ বেছে নেবে।
পরীক্ষায় খারাপ বা আশানুরূপ ফলাফল না এলে বাচ্চাকে বকাবকি থেকে বিরত থাকুন। বন্ধুর মত পার্শ্বে দাঁড়ান , তাকে শান্তনা দিন। আপনার এই সামান্য সহানুভূতি আপনার বাচ্চাটির মনে কিন্তু রেখাপাত করবে।
সম্প্রতি শাওন নামে এক কিশোর আত্মঘাতী হয়েছে। আর আত্মহত্যার আগে সে তার বিক্ষিপ্ত চিন্তার কিছু লেখা লিখে গেছে। আসুন পড়ে দেখি তার সেই সুইসাইডাল নোট।
"বাণিজ্য বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে ৪.৮৩ পায় আরাফাত শাওন। কিন্তু বাবা-মা তার এ রেজাল্টে খুশি নয়। জিপিএ ৫
না পাওয়ায় বাবা-মায়ের বকুনি খেতে হয় তাকে। বাবা-মার ওপর অভিমন করে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় সে। তার আগে সে নিজের নোটবুকে আগে লিখে যায় ব্যথা বেদনার কথাগুলো। পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হল তার কথা :
আমি জানি না আজ আমি ঠিক কি ভুল কাজ করছি তবে এখন এটা ছাড়া আমার আর কোন উপায় ছিল না। আসলে ছেলে হয়ে এ পরিবারে জন্ম গ্রহণ করাটাই আমার দূরভাগ্য। তা না হলে ছোট থেকে এ পর্যন্ত মেয়ের মতো সব সময় পরিবারের কাজ করতেই হয়েছে। আর কখনো পরিবার থেকে আমাকে খেলাধুলার সময় বা খেলতে দেওয়া হয়নি। আর আমিও মেয়ের মতো সব সময় মায়ের আঁচলের নিচেই ছিলাম।
আর আমি আদো জানি না যে আমি কি? এই পরিবারের বা আমার মা-বাবার সন্তান, তা না হলে সব সময় এ রকম শাসন আর কড়া শাসনের উপর আমাকে রাখা হয়েছে। কোন বাবা-মা তার সন্তানকে পড়া লিখার খরচে খোটা দেয় না। কিন্তু আমার মা বাবা সব সময় আমাকে বলে তোর জন্য মাসে মাসে হাজার হাজার টাকা খরচ করছি। এভাবেই প্রতি নয়ত বকাঝযকা করা হয়। সব সময় বাবার থেকে শুধু খারাপ ভাষার গালি আর গালি শুনতে হয়। যা আমার একটু বালো লাগতো না। কিন্তু আমি এতো দিন সহ্য করে ছিলাম। কারণ কোন কিছু করার কথা ভাবলে মনে হতো এ দুনিয়ায় তো বাবা-মায়ের আদর ভালোবাসা পেলাম না। পেলাম না শুখ শান্তি। আসলে মানুষ বলে যে ঠিক টাকা পয়সা ও ধন সম্পদ মানুষকে সুখী করতে পারে না। আর যদি আমি নিজের হাতে আত্মহত্যা করি তা হলে মরর পরও শান্তি পাবো না। আর মরার পর আমাকে জাহান্নামের আগুনে জ্বলতে হতো। তাই এখন আমার আর এসব কিছু সহ্য হচ্ছে না। …
আমাদের ছাত্রদের কি দোষ বলুন আমরা তো আমাদের মতো শ্রেষ্টা (চেষ্টা) করে যাই। তবে আমাদের দেশের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড গুলো কারণে আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার এমন হাল। এর আগের বছর সরকার তার নিজের স্বার্থের জন্য শিক্ষার হার বাড়িয়ে দিয়েছে। আর এবার হরতাল-অবরোধ দেয়ার ফলে বর্তমান সরকার বিরোধী দলিয় সরকারকে গালি দেওয়ার জন্য পাশের হার কমিয়ে দিয়েছে, যাতে দেশে ফেল এর হার বেড়েছে। বলুন আমরা আর কি ভাবে ভালো রেজাল্ট করতে পারি!!!???
আমাদের মা-বাবা চায় আমরা ভালো রেজাল্ট করি। কিন্তু দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার দিকে ও তো দেখতে হবে। আমার বাবা ও আমার আত্ত্বীয়-স্বজন আমার এ রেজাল্ট (৪.৮৩) এর উপর খুশিনা। সবাই আমাকে বকাবকি করছে। কিন্তু আমার স্কুলের মধ্যে ২য় স্থান পাওয়ার পরও কিন্তু তারা অন্যদের রেজাল্ট এর কথা দেখে না, ভাবে না। তাদের কথা আমাকে A+ পেতেই হবে। A+ কি গাছে ধরে যে আমি পেড়ে আনবো। আরো অনেক কথা যা মনের ভিতর জমা করে রেখেছি। কিন্তু বললে শেষ হবে না। থাক। যদিও আমি মারা যাই … তা হলে সবাই আমাকে ক্ষমা করে দিবেন। আর যদিও বেঁচে যাই….!!!
আমার কিছু ঋণ রয়েছে
DJ Flower Tuch= সূর্য ৯০০
আমার বন্ধু শুভ= ১০০ (টাকা)
ইসমাইল= ২০০/পূবালী ইলেকট্রনিক শহীদ মার্কেট
[লেখকের নিজ হাতে লেখা বানান অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে]।"
https://www.facebook.com/Psychobd
No comments:
Post a Comment