Saturday 12 October 2013

জীবনযুদ্ধে পরাজয় মানুষকে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দেয়!


 ১০অক্টোবর ছিলো বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস । ১৯৯২ সালের এই দিনে মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করতে ১৫০টিরও অধিক দেশের সদস্যরা একত্রে বেসেছিলেন। ১৫০টি দেশ নিয়ে গঠিত বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য ফেডারেশন প্রথম বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস পালনের জন্য এ দিনেটিকে বেছে নেয়।
 
বিশ্বের অন্যান্য সচেতন দেশের মতো বাংলাদেশেও এ উপলক্ষে প্রতি বছর নানা সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকে। ফলে মানসিক ভারসাম্যহীনতাকে মানুষ এখন আর জিন-ভুতের আছর কিংবা টোনা-টোটকা
ভেবে পীর-ফকিরের দ্বারস্থ হয়না ।
 
এবারের মানসিক স্বাস্থ্য দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় 'বয়োবৃদ্ধদের মানসিক স্বাস্থ্য'। সম্প্রতি এক জরিপে দেখা গেছে বয়োবৃদ্ধদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা শঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর কারণ হিসেবে রয়েছে কর্মমুখর জীবন থেকে অবসরপ্রাপ্ত হবার পরের জীবনে কর্মহীন সময়টা। অনেকেই জীবনের এই পরিবর্তনটা সহজভাবে মেনে নিতে পারেন না। বিপত্তিটা তখনই ঘটে।
 
গুটিয়ে ফেলতে থাকেন নিজেকে লোক, পরিবার, সমাজ থেকে।গড়ে তোলেন নিজের একটি একলা জগৎ।ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে থাকেন নিজের সেই একলা জগতে। বিষন্নতা তাকে আষ্টেপৃষ্ঠে আঁকড়ে ধরে। তারপর একদিন জীবনযুদ্ধে হেরে গিয়ে তিনি বেছে নেন আত্মহননের পথ। আর এমনটা এখন ঘটছে অহরহ।
 
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক  ডা. ওয়াজিউল আলম বলেন, আমাদের অবহেলা, অন্ধত্ব এবং অজ্ঞানতার সুযোগে ছোট ছোট আঘাত মনের মধ্যে বাসা বাঁধতে থাকে।
সেই ক্ষত ক্রমে ক্রমে ফুলে-ফেঁপে ওঠে প্রকট আকার ধারণ করে। তীব্র এবং জটিল মানসিক সংকটের সৃষ্টি করে।
 
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি জরিপ অনুসারে, বাংলাদেশে আট দশমিক চার মিলিয়ন অর্থাৎ মোট জনসংখ্যার শতকরা সাত ভাগ মানসিক অসুস্থতার শিকার। যার শতকরা তিন ভাগ বিষন্নতা জনিত, পাঁচ ভাগ দুশ্চিন্তা জনিত, ১৪ ভাগ হাইপারটেনশন থেকে নিদ্রাহীনতার জন্য এবং পাঁচ ভাগ রয়েছে ষাটোর্ধদের মধ্যে ডেমেনশিয়া জনিত মানসিক অস্থিতিশীলতা।
 
এই আধুনিক সমাজে আজও লোকলজ্জার বক্রহাসি উপেক্ষা করে  রোগীরা এবং তাদের আত্মীয়রা মানসিক স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের জন্য যায় না। এভাবেই মানুষ তিলে তিলে ভোগে আরও গভীরতর সংকটে ডুবে যায়।
 
এমন অনেক উপসর্গ, ব্যথা আছে যার কোনো দৈহিক ত্রুটি খুঁজে পাওয়া যায় না। রোগীরা কেবল চিকিৎসকের পর চিকিৎসক বদলান, পরীক্ষার পর পরীক্ষা করান- ইইজি, ইসিজি, তবু রোগ ধরা পড়ে না।
 
তবে এই অবস্থাও প্রতিহত করা সম্ভব যদি সময় থাকতে রোগির সাথে খোলামেলা আলোচনা করা যায়। আর এর জন্য কাউন্সিলিংয়ের বিকল্প নেই

নেট থেকে

No comments:

Post a Comment