Wednesday 5 March 2014

স্বাস্থ্যচিত্র :মানসিক চাপ


স্ট্রেস বা মানসিক চাপকে বলা হয় নীরব ঘাতক। আমেরিকান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব রোগ সচরাচর হয় তার ৬০ ভাগের ওপর মানসিক চাপের ভূমিকা রয়েছে।
জেনে রাখা ভালো
একই মানসিক চাপ সবাই সমানভাবে গ্রহণ করতে পারে না। কেউ যখন অনেক বেশি চাপ নিয়ে দিব্যি স্বাভাবিক জীবনযাত্রা চালিয়ে যাচ্ছে, অন্য কেউ তখন সামান্য চাপেই একেবারে ভেঙে পড়ছে। একেকজনের চাপ সহ্য করার ক্ষমতা কমবেশি হওয়ার কারণে এমনটি হয়। মানসিক চাপ-সংক্রান্ত কয়েকটি তথ্য জানা যাক।
১. চাপ কম না বেশি তা শরীর নির্ণয় করতে পারে না। এ কারণে অল্প চাপে থাকা মানুষটিও ডজনখানেক রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন। যেকোনো চাপে শরীরে প্রায় ১৪০০ ধরনের কেমিক্যাল নিঃসরিত হয়। এসব কেমিক্যালের বিক্রিয়ায় দ্রুত বয়সের ছাপ পড়ে শরীরে, আচরণগত সমস্যা দেখা দেয়, কাজ করার শক্তি কমে আসে, কর্মস্পৃহাও কমায়।
২. গবেষণায় দেখা গেছে, স্ট্রেস বা চাপের কারণে মস্তিষ্কের কর্টেক্সের কার্যকারিতা কমে যায়। এ কারণে চাপে থাকলে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ভুল হয়, কাজ গুছিয়ে করা হয়ে ওঠে না, কাজের মধ্যে ভুল থেকে যায়। চাপহীন পরিবেশে আবেগ, যুক্তি ও চিন্তার সমন্বয় থাকে, চাপে এই সমন্বয় ভেঙে যায়।
৩. কিছু কিছু ক্ষেত্রে যে ব্যক্তি চাপে থাকেন, তিনি বুঝতেও পারেন না যে চাপের মধ্যে আছেন। দৈনন্দিন জীবনে এ ধরনের চাপ তাঁর কাছে স্বাভাবিক মনে হলেও শরীরে কিন্তু এর প্রভাব ঠিকই পড়ে। এটা হতে পারে যথাসময়ে অফিসে পৌঁছানোর তাড়া, যথেষ্ট ঘুম না হওয়া, বাচ্চার স্কুল, লেখাপড়া, বেড়ে ওঠা-সংক্রান্ত চিন্তা, সঞ্চয় করতে না পারা, যথেষ্ট সচ্ছলতা না থাকা, কাজের মধ্যে কয়েক দিনের ছুটি কাটাতে না পারা ইত্যাদি।
৪. স্ট্রেস বা চাপ সামলানোর সহজ ও বিজ্ঞানসম্মত উপায় হচ্ছে চাপ অনুভূত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা নিয়ে কাজ করা, মনের ভেতর কোনো কিছু পুষে না রাখা। অনেকেই একটানা কাজ করতে করতে বিরক্ত হয়ে যাওয়ার পর ভাবেন, কাজ শেষে কয়েক দিন বিরতি নিলেই ঠিক হবে; কিন্তু চিকিৎসকরা বলেন, আগে চাপ কমান তারপর কাজ শেষ করুন।
গ্রন্থনা : ডা. মুজাহিদুল ইসলাম

No comments:

Post a Comment