Thursday 19 June 2014

সংসারে মানসিকতা পাল্টানো দরকার


বাবুর সাথে ফারহানার বিয়ে হয় ৩বছর আগে। ওদের এখন ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। তো বিয়ের পরদিন মানে বৌভাতের দিন থেকেই মেয়েটাকে বাবুর পরিবারের সবাই জ্বালিয়ে পুড়িয়ে মারে। বাবুকে ফোন করে আবল তাবল কানভারী করা কথা বলে ফারহানার উপর শারিরীক ও মানসিক অত্যাচার করায়। প্রথম যখন বিয়ের পর বাবুর বাবা মা ঢাকায় আসে ছেলের সংসার দেখতে তখন ফারজানা সব খিছু শাশুড়ীর কথা মত করতে
থাকে। যেদিন তারা আসে সেইদিনই তাদের আসার ঘন্টাখানেক আগেই বাবু কোন ঘরে কে থাকবে এই নিয়ে তর্ক বাঁধিয়ে ফারজানার গলা টিপে ধরে আর গায়ে চুলার উপর থাকা গরম পানি ঢেলে দেয়। ফারজানার গলাটা ফুলে যায়। তারা যখন ফারহানাদের বাসায় পৌছায় তখন ফারহানা তাদেরকে বলে যে পানি ফুটাতে দিয়েছিল তাই গায়ে পড়েছে ছলকে! আর গলায় ব্যাথা পেয়েছে।

গলায় ব্যাথা থাকায় ফারহানা কিছু খেতে পারছিল না। ফ্রীজে ভুঁড়ি ছিল। ফারহানা কাটতে বুঝত না বলে রেখে দিয়েছিল। বাবু মা' কে রান্না করতএ বলে সেদিন। ফারহানা শাশুড়িকে মশলা রেডী করে দেয়। তিনি রান্না করেন। ফারহানা শুধু দুধ আর জুস খাচ্ছিল গলা ব্যাথায়। ফারহানা খেতে পারল না, যদিও ভুড়ি ওর খুব পছন্দের! পরদিন কাজের বুয়াকে সমান্য ভুঁড়ি ভাজি দিল ফারহানা। বুয়াটাকে ভাল কিছু রান্না হলেই দেয় সে। তারপর নিজে ভার্সিটিতে গেল। বাসায় ফেরার পর ওর শাশুড়ি জিজ্ঞেস করলো কাল কে এত গুলো ভুঁড়ি রান্না হল কোথায় গেল। সে বললো বুয়াকে অল্প দিয়েছে। ওর শাশুড়ির তাও বিশ্বাস হল না। বিকেলে বুয়া আসলে তাকে জিজ্ঞেস করলো সত্যতা জাচাই করতে। রাতে খাবার টেবিলে বসে বাবুকে কি যেন বললো ফিসফিস করে, তারপরই বাবু খেয়ে উঠেই ফারহানা কে অকারনেই থাপ্পড় দিল অনেক গালিগালাজ করলো।

এ পর্যন্তই থাক আপাতত। ঘটনাটা চাঁদ সূর্যের অস্তিত্বের মত সত্য!!! 



দুটি ঘটনায় সত্য, এবং বাস্তব জগতেও হরহামেশা ঘটছে এমন ঘটনা! কিন্তু এর ফলাফল টা আসুন একটু বিচার করি! যদিও আমার জ্ঞান গরিমা এত বেশি না! অধিকাংশই মুখে না বললেও মনে মনে বিশ্বাস করতে শুরু করবেন এ যুগের মেয়েরা, কিংবা সব মেয়েরা শশুর শাশুড়ীর সাথে বনিবনা করতে পারেনা! আবার আমার দেয়া ঘটনাটা যারা দেখেছে যেমন ধরেন ফারহানার বোন। সে বলেছিল" আমি বাপ মা মরা এতিম ছেলে কে বিয়ে করব," এমনকি ফারহানা এখন নিজেই শ্বশুর শাশুড়ি নামক সম্পর্কগুলোকে ভয় পায়! 

আবার এইসব ঘটনা দেখে অনেক ছেলের অবচেতন মনে ধারনা হয়ে যায় "আমার বউ কখনও আমার বাপ মাকে দেখতে পারবেনা"! আবার ছোটবেলা থেকেই পরিবারের ছেলেটিকে মা বা বোনরা বলে "হ্যা বউ আসলে তো আমাদের ভুলে যাবি!!" তাতে করে বিয়ের পর তার বউ তাকে তার পরিবারকে নিয়ে ভাল মনে কিছু বললেও সে তা নেতিবাচক অর্থ খুঁজবে।আবার নির্যাতিতা মেয়েটিও শশুর শ্বাশুড়ীর সন্তান তূল্য ভেবে করা শাসন কেও নির্যাতন বলে ভ্রমে পড়বে!! কিছু দূষ্ট বা নষ্ট মানসিকতার নারী বা পুরুষ কখনও কখনও উভয়েই ভুল করে, আর তারই শাস্তি পায় কিছু সহজ সরল নারী পুরুষ, কিংবা কখনও কখনও পুরা পরিবার বা সমাজ ব্যবস্থা; 
আসলে মানসিকতা পাল্টানো দরকার। 

সময় থাকতেই নিজেরা আলাপ করুন, প্রয়োজনে অভিজ্ঞ কাউন্সিলারের  সহায়তা নিন।
ফারা তন্বী

No comments:

Post a Comment