মানসিক রোগ বলতে সচরাচর মানুষ যা ধারণা করে তা হলো মানুষটা হয়তো নোংরা কিংবা উল্টা-পাল্টা আচরণ করে বা এক কথায় আমরা যাদের পাগল বলি। মানসিক রোগ নিয়ে আরো একটি বড় সমস্যা হলো আমরা যে কোনো রোগের জন্য স্বতঃস্ফূর্তভাবে চিকিৎসকের কাছে যাই, কিন্তু মানসিক রোগের জন্য কোনো চিকিৎসকের কাছে যেতে হলেই আমাদের এক ধরনের লুকোচুরি চলে। আজ আমরা মানসিক রোগ নিয়ে এমন কিছু ভুল ধারণার কথা জানবো।
আমরা কি বুঝি, আসল ব্যাপার কী?
আমাদের অনেকেরই ধারণা হলো মানসিক রোগ মানে পাগল বা উল্টাপাল্টা আচরণ করা। কিন্তু সত্যি বলতে কি মোট মানসিক রোগীর মাত্র এক ভাগের মধ্যে এরকম উল্টা পাল্টা আচরণ দেখা যায়। মোদ্দা কথা হলো মানসিক রোগের অধিকাংশই উদ্বেগজতিন ও আবেগজনিত।
মানসিক ডাক্তার সব রোগীকে মানসিক রোগী বানিয়ে দেন
এটিও একটি ভুল ধারণা এবং মানসিক রোগে চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন না হওয়ার একটি অন্যতম কারণ। আসলে প্রতিটি রোগেরই একটি নির্দিষ্ট উপসর্গ আছে। তবে কেউ যদি কোনো মানসিক সমস্যায় আক্রা্ত হয় তবে অবশ্যই তার কাজকর্মে, মানুষের সঙ্গে মিশতে ও নিজের দৈনন্দিন কাজ করতে সমস্যা দেখা দেবে।
মানসিক রোগ সারা জীবনেও ভালো হয় না
মানসিক রোগ ভালো হয় না, কিংবা একবার ওষুধ খেলে সারা জীবন খেতে হয় এমন ভুল ধারণা আমাদের অনেকের মধ্যেই আছে। মানসিক রোগ সম্পূর্ণভাবে নিরাময়যোগ্য। যদি রোগী ঠিকমতো ওষুধ খায় ও নির্দেশনা মেনে চলে এবং নিয়মিত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে তবে সারা জীবন ওষুধ খেতে হয়না সবার।
মানসিক রোগের চিকিৎসকরা রোগীকে ঘুম পাড়িয়ে রাখেন
সব ওষুধই ঘুম আনে না, আর ওষুধ যদি ঠিক পরিমাণে খাওয়া হয় তবে দিনে ঘুমানোর কথা না বরং দৈনন্দিন কাজে উৎসাহ ও আগ্রহ বাড়ে। তবে কেউ যদি ওষুধ অনেক রাত করে খান অথবা রাতের ওষুধ সকালে খান তখন এমনটা হতে পারে।
মানসিক রোগের চিকিৎসকরাও একসময় রোগী হয়ে যান
এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে মানসিক রোগ কোনো ছোঁয়াচে রোগ না। আর কথা বলা হয় শুধু রোগ নির্ণয়ের জন্য। অন্যান্য বিষয়ের চিকিৎসকদের মতোই। তাই মানসিক চিকিৎসা করতে করতে চিকিৎসকই রোগী হয়ে যাবে এর কোনো মানে নেই।
মানসিক রোগের ওষুধের অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
অন্যান্য সব ওষুধের যেমন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে তেমনি মানসিক রোগের ওষুধেও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই তা বলবো না। তবে তা অন্য অষুধের চেয়ে বেশি হবার কোনো সম্ভাবনাই নেই।
মানসিক রোগ ভালো হয়ে গেলে আর ওষুধ খাওয়ার দরকার কি?
ভালো হবার পরও চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ বন্ধ করলে এসব রোগ পুনরায় হবার সম্ভাবনা থাকে।
শুধু সাইকোথেরাপি করে মানসিক রোগ ভালো হয়
ওষুধ ও সাইকোথেরাপি উভয়ই রোগ ভালো করে। শুধু সাইকোথেরাপিতে সাময়িক উপশম হলেও রোগ সম্পূর্ণ ভালো হয় না।
মানসিক রোগ সারা জীবনের বোঝা, কিছুই করা যাবেনা মানসিক রোগীরা চিকিৎসার মাধ্যমে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক ভাবে তাদের কাজকর্ম করতে পারেন।
বিয়ে দিলে মানসিক রোগ ভালো হয়
মানসিক রোগীদের ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া বিয়ে দিলে রোগীর অবস্থা আরো খারাপ হতে পারে। আবার অনেকদিন ধরে শারীরিক অসুখে ভুগলেও মানসিক রোগ দেখা দিতে পারে।
হঠাৎ ওষুধ বন্ধ করলে বা কমালে-বাড়ালে যদি ক্ষতি হয়
চিকিৎসক জেনে- বুঝেই রোগের ধরন এবং তীব্রতা বুঝে ওষুধ দেন, তাই তাতে ক্ষতির সম্ভাবনা অনেক কম। কিন্তু অনেক সময় অনেকের শরীরে কাজ করতে কম বেশি হতে পারে। এজন্য নিজেরা কিছু না করে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আস্তে আস্তে ওষুধ বাড়ানো ও কমানো যেতে পারে।
আজকে মানসিক রোগ নিয়ে আমাদের অতি পরিচিত কিছু ভুল ধারণা নিয়ে কথা হলো। শুধু রোগ না, বিভিন্ন সাইকোলজিক্যাল সমস্যাও পুরো ভালো হয় সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে। তাই ভুলগুলো শুধরে নিয়ে সামনে এগিয়ে যান।
ডা. চিরঞ্জীব বিশ্বাস
সহকারী অধ্যাপক
উত্তরা মহিলা মেডিক্যাল কলেজ
আমরা কি বুঝি, আসল ব্যাপার কী?
আমাদের অনেকেরই ধারণা হলো মানসিক রোগ মানে পাগল বা উল্টাপাল্টা আচরণ করা। কিন্তু সত্যি বলতে কি মোট মানসিক রোগীর মাত্র এক ভাগের মধ্যে এরকম উল্টা পাল্টা আচরণ দেখা যায়। মোদ্দা কথা হলো মানসিক রোগের অধিকাংশই উদ্বেগজতিন ও আবেগজনিত।
মানসিক ডাক্তার সব রোগীকে মানসিক রোগী বানিয়ে দেন
এটিও একটি ভুল ধারণা এবং মানসিক রোগে চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন না হওয়ার একটি অন্যতম কারণ। আসলে প্রতিটি রোগেরই একটি নির্দিষ্ট উপসর্গ আছে। তবে কেউ যদি কোনো মানসিক সমস্যায় আক্রা্ত হয় তবে অবশ্যই তার কাজকর্মে, মানুষের সঙ্গে মিশতে ও নিজের দৈনন্দিন কাজ করতে সমস্যা দেখা দেবে।
মানসিক রোগ সারা জীবনেও ভালো হয় না
মানসিক রোগ ভালো হয় না, কিংবা একবার ওষুধ খেলে সারা জীবন খেতে হয় এমন ভুল ধারণা আমাদের অনেকের মধ্যেই আছে। মানসিক রোগ সম্পূর্ণভাবে নিরাময়যোগ্য। যদি রোগী ঠিকমতো ওষুধ খায় ও নির্দেশনা মেনে চলে এবং নিয়মিত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে তবে সারা জীবন ওষুধ খেতে হয়না সবার।
মানসিক রোগের চিকিৎসকরা রোগীকে ঘুম পাড়িয়ে রাখেন
সব ওষুধই ঘুম আনে না, আর ওষুধ যদি ঠিক পরিমাণে খাওয়া হয় তবে দিনে ঘুমানোর কথা না বরং দৈনন্দিন কাজে উৎসাহ ও আগ্রহ বাড়ে। তবে কেউ যদি ওষুধ অনেক রাত করে খান অথবা রাতের ওষুধ সকালে খান তখন এমনটা হতে পারে।
মানসিক রোগের চিকিৎসকরাও একসময় রোগী হয়ে যান
এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে মানসিক রোগ কোনো ছোঁয়াচে রোগ না। আর কথা বলা হয় শুধু রোগ নির্ণয়ের জন্য। অন্যান্য বিষয়ের চিকিৎসকদের মতোই। তাই মানসিক চিকিৎসা করতে করতে চিকিৎসকই রোগী হয়ে যাবে এর কোনো মানে নেই।
মানসিক রোগের ওষুধের অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
অন্যান্য সব ওষুধের যেমন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে তেমনি মানসিক রোগের ওষুধেও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই তা বলবো না। তবে তা অন্য অষুধের চেয়ে বেশি হবার কোনো সম্ভাবনাই নেই।
মানসিক রোগ ভালো হয়ে গেলে আর ওষুধ খাওয়ার দরকার কি?
ভালো হবার পরও চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ বন্ধ করলে এসব রোগ পুনরায় হবার সম্ভাবনা থাকে।
শুধু সাইকোথেরাপি করে মানসিক রোগ ভালো হয়
ওষুধ ও সাইকোথেরাপি উভয়ই রোগ ভালো করে। শুধু সাইকোথেরাপিতে সাময়িক উপশম হলেও রোগ সম্পূর্ণ ভালো হয় না।
মানসিক রোগ সারা জীবনের বোঝা, কিছুই করা যাবেনা মানসিক রোগীরা চিকিৎসার মাধ্যমে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক ভাবে তাদের কাজকর্ম করতে পারেন।
বিয়ে দিলে মানসিক রোগ ভালো হয়
মানসিক রোগীদের ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া বিয়ে দিলে রোগীর অবস্থা আরো খারাপ হতে পারে। আবার অনেকদিন ধরে শারীরিক অসুখে ভুগলেও মানসিক রোগ দেখা দিতে পারে।
হঠাৎ ওষুধ বন্ধ করলে বা কমালে-বাড়ালে যদি ক্ষতি হয়
চিকিৎসক জেনে- বুঝেই রোগের ধরন এবং তীব্রতা বুঝে ওষুধ দেন, তাই তাতে ক্ষতির সম্ভাবনা অনেক কম। কিন্তু অনেক সময় অনেকের শরীরে কাজ করতে কম বেশি হতে পারে। এজন্য নিজেরা কিছু না করে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আস্তে আস্তে ওষুধ বাড়ানো ও কমানো যেতে পারে।
আজকে মানসিক রোগ নিয়ে আমাদের অতি পরিচিত কিছু ভুল ধারণা নিয়ে কথা হলো। শুধু রোগ না, বিভিন্ন সাইকোলজিক্যাল সমস্যাও পুরো ভালো হয় সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে। তাই ভুলগুলো শুধরে নিয়ে সামনে এগিয়ে যান।
ডা. চিরঞ্জীব বিশ্বাস
সহকারী অধ্যাপক
উত্তরা মহিলা মেডিক্যাল কলেজ
No comments:
Post a Comment