Saturday 6 June 2015

শেবাচিম হাসপাতালের মানসিক ওয়ার্ড নিজেই অসুস্থ্য!

শুক্রবার বেলা সাড়ে ১২টা। বরিশাল শের ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালের মানসিক ওয়ার্ড। রোগীরা যে যার বেডের সাথে বাঁধা। তাই বেডে বসেই যে যার মত আচরণ করছে। পুরো ওয়ার্ডে দেখা নেই ব্রাদার কিংবা কোন চিকিৎসকের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেল, এই ওয়ার্ডে তিনজন ব্রাদারের ডিউটিতে
থাকার কথা। কিন্তু তারা জরুরী বিভাগে সার্ভিস দিচ্ছে। কথা হলো সেখানে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা এক রোগীর স্বজন মনির মোল্লার সাথে। তিনি জানালেন, তার ছোট ভাই অসুস্থ্য হওয়ার পর এ হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন। কিন্তু এখানে ব্রাদাররা থাকেন না। চিকিৎসকরা ঠিক মত আসেন না। ওয়ার্ড বয়দেরও খুঁজে পাওয়া যায় না।
আরেক রোগীর স্বজন জানালেন, চিকিৎসক, ব্রাদার ও ওয়ার্ড বয় না থাকার বিষটি তিনি নিজেই গিয়ে জানানোর পরও হাসপাতাল পরিচালক কোন ব্যাবস্থা গ্রহণ করেনি। মনিটরিং এর অভাবে এমনটা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
ওর্য়াডের এক আয়া জানালেন, মানসিক ওয়ার্ডে একজন চিকিৎসক আছে। সে মাঝে মাঝে পরিদর্শনে আসেন। রোগীদের চিকিৎসা দেন। আর তিনজন ব্রাদারের সেখানে দায়িত্ব থাকার শত্তেও তারা চিকিৎসক চলে যাওয়ার পরে কখনেই থাকেন না। ফের চিকিৎসক আসার আগে এসে হাজির হন। মুলত তারা জরুরী বিভাগে সার্ভিস দেন। সেখানে রোগী ভর্তির সময় অতিরিক্ত ফি আদায় করে নিজেরা ভাগভাটয়ারা করে নেয়। তাই সেখানে থাকতেই তারা বেশি উৎসাহ বোধ করেন।
জরুরী বিভাগের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, জরুরী ওয়ার্ডে ছোট-খাটো কাটা-ছেঁড়া সেলাই, ব্যান্ডেজ করার নামে রোগীদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করে ব্রাদাররা। এখান থেকে অতিরিক্ত আয়ের উৎস হওয়ায় এখানটায় কাজ করার জন্য বেশিরভাগ ব্রাদাররা ওৎ পেতে থাকে। এখানে দায়িত্ব না থাকার পরেও এখানেই বেশি সময় ব্যায় করেন তারা।
জানা গেছে, বরিশালসহ ১১ জেলা তথা দক্ষিণাঞ্চলের মানষিক রোগীদের একমাত্র চিকিৎসা কেন্দ্র শেবাচিম হাসপাতাল। কিন্তু এখানে চিকিৎসা করতে এসে প্রতিনিয়ত অবহেলা ও প্রতারণার শিকার হচ্ছে মানষিক রোগী ও তাদের স্বজনরা। মানসেক ওয়ার্ডে এমন বেহাল অবস্থা দেখে ইতোমধ্যে অনেক রোগীকে এখন থেকে নিয়ে গেছে বলে জানা গেছে।
এ ওয়ার্ডের একমাত্র চিকিৎসক ডাঃ তপন কুমার শাহা আমাদের বরিশাল ডটকম’কে জানান, তিনি তার মত দায়িত্ব পালন করছেন। তবে ব্রাদারদের দায়িত্ব অবহেলা প্রসঙ্গে তিনি কোন মন্তব্য করেননি।
এ ব্যাপারে শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ কামরুল হাসান সেলিম আমাদের বরিশাল ডটকম’কে জানান, বর্তমানে মানসেক ওয়ার্ডে মাত্র সাত জন রোগী আছে। তাই তিনজন ব্রাদারকে ভাগ করে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। তবে রোগীর সংখ্যা বাড়লে তখন ব্রাদারের সংখ্যাও বাড়ানো হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ব্রাদাররা যদি ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালনে অবহেলা করে তবে তা তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আমাদের বরিশাল

2 comments: